তৃষ্ণা, পিয়াস, অনাহার, উপবাস কিংবা ভুখা 
            যেখানে যেমন নামে মানাই ভালো আমি, 
কারও কাছে আদূরে, প্রশংসিত, অতি আসক্ত 
                কারও কাছে বা অতি বদনামী ।
সবখানে আমার সহজ বিচরণ তাই নেই কোনো 
                    অভিযোগ, নাহি কোনো খেদ, 
 কারও অঢেল ঢেলে দিয়ে কারও বা থেকে সবকিছু 
                 কেড়ে নিয়ে আছি আমি বেশ ।।
গেল ৬ই আগস্ট হিরোশিমা দিবস, এক সংবাদ চ্যানেল 
               ফুটেজে ভেসে এলো এক শিরোনাম,
সোমালিয়ায় ৯০ দিনে ২৯ হাজার শিশু মৃত্যু
                    অকাল জীবনাবসান ।
সেখানে হিরোশিমা-নাগাসাকির লিটল্-বয় কিংবা 
                 ফ্যাট-ম্যানের তান্ডবলীলা নয়,
আমিই ক্ষুধার প্রবল গ্রাসে লন্ডভন্ড সোমালিয়ায় 
                   এত সব প্রদীপের ক্ষয় ।
আমারই তাড়নাতে ধুকে ধুকে লড়ছে আরও যে 
                   কত প্রাণ, মৃয়মান নিস্প্রান, 
আরও যে সলীল হবে কত যুগে যুগে নরপ্রাণ
                আমি ক্ষুধার '৭৪ই নিকৃষ্ট প্রমান ।
সে দিনগুলোতে অকাতরে মিছেমিছি নিভে গেল 
                     হতদরীদ্রের কতশত প্রাণ ! 
তারাই বুঝি বেশি বুঝে চলে গেছে আমি ক্ষুধা
                কত তীব্র কত যে বেগবান !
আমারই জ্বালায় কত নরের চারিত্রিক ক্ষয়,
         কত নারী -গোলাপী হয় বিলিয়ে সমভ্রম তার,
আমারই মরণ ছোবলে কত পরিবার, কত গ্রাম, 
                কত যে সমাজ হলো জ্বলেপুড়ে ছারখার ।  
          
যার আছে শক্তি অপরাপর মজবুত ভিত্তি 
                আমি তারই লালসার হাতিয়ার,
কারও কাছে বেশি, ক্ষুধা হয়ে আসি 
               ছিড়ে সব বেড়াজাল মায়ামমতার ।
আমি পরাশক্তির হয়ে "কড়াল আগ্রাসন"
                           নামধারী ভয়ংকর ক্ষুধা,
দুর্বল যত জাতির খনিজ সম্পদ কিংবা ভুলুন্ঠনে 
               যুদ্ধ বাঁধাই আমায় দিলে বাধা ।
নীতির রাজা রাজনীতি সেথাও আমার
               সদা বিচরণ অতি,
"ক্ষমতার চেয়ার" ক্ষুধা বারবার ধরে 
               রাখতে পারি যদি ? 
"রাজপথের লড়াই" ক্ষুধা বিরোধী মিছিলেও 
                 আমি সদা-সর্বদা বিদ্যমান, 
বাধা দিলেই দাঙ্গা-ফ্যাসাদ-আগুনে অকস্যাৎ
              পতনে মিলে যদি চেয়ার মূল্যবান ? 
অফিস-আদালতে কেরানী হতে মন্ত্রী, সচিব, 
                      পরিচালক, এম. পি., চেয়ারম্যান, 
আমি ক্ষুধা তাদের অতি আদুরের 
               আপনারা "ঘুষ" তার নাম দেন । 
মাস ঘুড়লে কিংবা বছর পেরোলে আপনারা জনগণ 
               ট্যাক্স দিয়ে তাদের করেন লালন,
দায়ীত্ব-কর্তব্য করলো কতটুকু "ঘুষ ক্ষুধা" আমি  
                পকেটে পড়লো না যখন ?
থানা-পুলিশ, জ্বজ-আদালতে আমি "ক্ষুধা ঘুষ"
                        অতি প্রিয়, অতি পরিচিত,
এক্ষুধা না মেটালে দোষী-নির্দোষী নির্বিশেষে
              জেল-জুলুম-ডান্ডা অবধারিত ।
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা উকিলের সুস্বজ্জিত 
               বিশাল কনসাল্টিং চেম্বারে,
আমি "কষাই ক্ষুধা" আছি ভালো বেশ বড় 
          "ফিস" কিংবা "কমিশনের" আকারে ।
আমি চোরের কাছে "নিরাপদ চুরির" নেশা 
           আর দোকানীর "ওজন চুরির" ক্ষুধা,
ফল-ফ্রুটে, খাদ্য-শস্যে ফরমালিন "ভেজাল মারার ক্ষুধা"
                      নকলে সফল কিছু বাঙ্গালীর মেধা ।
আমি মজুতদার, ব্যবসায়ীদের নতুন আবিষ্কার 
               "সিন্ডিকেট ক্ষুধা" লভি অধিক মুনাফা,
বেতাল বাজারে বেহাল দশা স্বল্প-আয়ের 
              ভোক্তাদের করি ঘনঘন রফা-দফা ।
মহাগ্রাসী আমি মহাবিশ্বেও আছি ক্ষুধা চিরন্তন
                   যেথায় মোর নাম ব্লাক-হোল,
লক্ষ্-কোটি বছর ধরে গ্রাস করে আসছি 
               সৃষ্টির যত গ্রহ-রাজি নক্ষত্র মন্ডল ।
 সৃষ্টির যত কীট-পতঙ্গ, পশু-পক্ষীর, জীব-জানোয়ারের 
                মাঝেও আছি আমি খিদের ক্ষুধা, 
কিন্তু মানুষের মানষবরে সীমাহীন তীব্র ক্ষুধার 
               মেলেছে যে ডানা মেটাবে কে তা ?
     আজরাইলের মাঝেও আছি আমি প্রচন্ড ক্ষুধা,
     তার সিদ্ধ হস্ত প্রসারিত হলে তখনি বুঝবে তা,   
     তার জন্যে হিসেবের খাতায় জমা রেখেছো কত টা ?
            
                        
            
            
            
                        
            
            
                        
            
         
        
               
   
    
                    
        
        
            
            
                 ২৫ জুলাই  - ২০১১ 
                                        
                            গল্প/কবিতা:
                            ১২ টি
                        
                    
            
            
         
     
    
        
বিজ্ঞপ্তি
        এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
    
    
        প্রতি মাসেই পুরস্কার
        
            বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
        
        
            লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
            
                - 
                    
                    
                        প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
                        প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
                     
- 
                    
                    
                        দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
                        প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
                     
- 
                    
                    
                        তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
                     
 
     
    
        
        বিজ্ঞপ্তি
        “নভেম্বর ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
        প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী